বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) ১৯৫৯ সালের ২৭ মে পল্লী উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সূচনালগ্নেই একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আখতার হামিদ খানের নেতৃত্বে নিবেদিত প্রাণ কিছু গবেষক গ্রামীণ জনগণকে সাথে নিয়ে নিরন্তর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে এ দেশে পল্লী উন্নয়নের উপযোগী কিছু মডেল কর্মসূচী উদ্ভাবন করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ষাটের দশকে গ্রামাঞ্চলে বিরাজিত সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করা হয়। এসব কর্মসূচীর মধ্যে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বিষয়গুলো হচ্ছে :
১. গ্রামে টেকসই সংগঠন সৃষ্টি,
২. ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পুঁজি সৃষ্টি,
৩. অবকাঠামোগত উন্নয়ন, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ,
৫. স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, মহিলা শিক্ষাসহ সমাজ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের প্রসার,
৬. গ্রামের সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতায় একটি সংগঠিত গ্রাম সমাজ সৃষ্টি,
৭. অকৃষি খাতে ভূমিহীন শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থান,
৮. গ্রামের সাথে বহির্বিশ্বের কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন এবং
৯. সরকারের সেবা গ্রামে পৌছানোর কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবন।
এই ৯টি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বিষয়কে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য একাডেমি ষাটের দশকেই সমন্বিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করে।
বার্ড স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে বার্ড পরিচালিত হয় যার সভাপতি হলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী। মহাপরিচালক একাডেমির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যাকে একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও নয় জন পরিচালক সহায়তা প্রদান করে থাকে। একাডেমির সমস্ত কর্মকাণ্ড নয়টি বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে যার প্রধান হিসেবে একজন করে পরিচালক দায়িত্ব পালন করেন। একাডেমি কর্তৃক উদ্ভাবিত পল্লী উন্নয়নের ‘কুমিল্লা মডেল’ এর জন্য বার্ড দেশে-বিদেশে সুখ্যাতি অর্জন করে। পল্লী উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বার্ড ১৯৮৬ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ লাভ করে। এছাড়াও পল্লী উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ অবদানের জন্য বার্ড জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক-২০১৩ অর্জন করে এবং ২০২২ সালে বার্ড আজিজ-উল-হক রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০২২ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে।
বর্তমানে বার্ডে কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৩৬৫জন।