প্রায়োগিক গবেষণার শিরোনাম: বার্ড প্রদর্শনীঃ দুগ্ধ, পোল্ট্রি ও ছাগলের খামার
উদ্যোগী মন্ত্রণালয়/বিভাগ |
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ |
বাস্তবায়নকারী সংস্থা |
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একডেমি (বার্ড) |
বাস্তবায়নকাল |
জুলাই ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ – জুন ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ |
বাজেট |
১৫,০০,০০০ (পনের লক্ষ) টাকা (২০২৩-২৪) |
অর্থায়নের ধরণ ও উৎস |
বার্ডের রাজস্ব বাজেট |
প্রায়োগিক গবেষক/ গবেষকবৃন্দের নাম ও পদবি |
জনাব মোঃ জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক (প্রকল্প)
|
প্রকল্প এলাকা
বার্ড ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আলো, বাতাসপূর্ণ সমতল স্থানে পর্যাপ্ত ভূমির একটি প্লটে প্রদর্শনী খামারটি গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রকল্পের/ প্রায়োগিক গবেষণার পটভূমি:
বাংলাদেশের মানুষের দারিদ্র্য হ্রাসকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয়বর্ধন ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রাণিসম্পদ খাতের গুরুত্বপূর্ন অবদান রয়েছে। দেশের মোট শ্রম শক্তির ২০% প্রত্যক্ষ ও ৫০% লোক পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদের উপর নির্ভরশীল। পল্লী উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার এই প্রাণিসম্পদ খাত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপ্রসূত আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প যা বর্তমানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাঙ্কে রূপান্তরিত হয়েছে তার অন্যতম প্রধান উপাদান গুলো হলো গাভী পালন, হাস-মুরগি পালন ও ছাগল পালন। কাজেই এই প্রাণিসম্পদ খাতের অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। জনসঙ্খা বৃদ্ধি এবং শিল্প বিপ্লবের কারণে দেশে দিন দিন আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ে সমন্নিত কৃষি কর্মকান্ডের মাধ্যমে কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে প্রাণিসম্পদ ও সমন্বিত কৃষি খামার এর আলোকে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ডেইরি, পোল্ট্রি ও ছাগলের প্রদর্শনী খামার গড়ে তোলে। শুরুতে (২০১৫ সালে) বার্ড ও কোইকা বাংলাদেশ এর যৌথ প্রয়াসে খামারটি স্থাপন করা হয়। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর হতে আনীত ০৪টি হলস্টেইন ফ্রিসিয়ান জাতের দুগ্ধবতি গাভী দিয়ে খামারটির যাত্রা হলেও বর্তমানে খামারটিতে ২৬টি সংকর জাতের গরু রয়েছে। তাছাড়া, গরুর পাশাপাশি ২০১৮ সালে খামারে একটি পোল্ট্রি ইউনিট ও একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ইউনিট স্থাপন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের খামারী উদ্যোক্তা পর্যায়ের প্রায় ৫০০০ জনকে এই প্রদর্শনী খামারের মাধ্যমে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রকল্পের/ প্রায়োগিক গবেষণার মূল উদ্দেশ্য:
তিনটি মুখ্য উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে গবেষণাটি বাস্তবায়ন করা হয়।
১. আধুনিক পদ্ধতিতে গরু ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন ও প্রদর্শন;
২. প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণা পরিচালনা; এবং
৩. মানসম্মত ও টেকসই প্রাণিজ পন্য উৎপাদন ও খামারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
প্রকল্পের/প্রায়োগিক গবেষণার মূল কম্পোনেন্টসমূহ:
ডেইরিঃ বার্ড প্রদর্শনী ডেইরি খামারে মোট ২৬টি হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু আছে। এর মধ্যে ১২টি গাভী, ২টি ষাড়, ০৬টি হেইফার (বকনা) ও ৬টি বাছুর রয়েছে। প্রত্যেকটি গরুকে তাদের দৈহিক ওজন অনুযায়ী চাহিদা মোতাবেক আঁশ জাতীয় ও দানাদার খাদ্য প্রদান করা হয়। খড়ের সাথে কাঁচা ঘাস ও দানাদার খাদ্য প্রদান করা হয়। গরু গুলোকে সব সংক্রামক রোগের টিকা দেওয়া হয়। খামারের গরুগুলোকে চারনভূমিতে চড়ানো হয়।
পোল্ট্রিঃ পাহাড়ী অঞ্চলে পানি ছাড়া কিভাবে হাস পালন করা যায় তা প্রদর্শনের জন্য ২০×২০ বর্গফুটের একটি চৌবাচ্চা তৈরি করে সেমি-ইন্টেন্সিভ পদ্ধতিতে হাস পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে খামারে ৫০০ টি জিনডিং জাতের হাঁস রয়েছে। গ্রামীণ পর্যায়ে প্রান্তিক খামারীরা যে ভাবে স্বল্প খরচে হাঁস পালন করে ঠিক সে ভাবেই বার্ড প্রদর্শনী পোল্ট্রি খামারে হাঁস পালন করা হচ্ছে। কিছু সময় পানিতে এবং কিছু সময় ঘরে রেখে হাঁসগুলোকে পালন করা হচ্ছে। হাসগুলোকে নিয়মিত ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগের ভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে।
ছাগলঃ সল্প ও মাঝারি পুজির মাধ্যমে আয় বর্ধন ও দারিদ্র্য হ্রাস করণের লক্ষ্যে একটি ছোট আকারের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের খামার গড়ে তোলা হয়েছে। খামারে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের মোট ৩০টি ছাগল রয়েছে এর মধ্যে ১৮টি ছাগী, ৪টি পাঁঠা ও ৮টি বাচ্চা ছাগল রয়েছে। মাচা পদ্ধতিতে পরিবেশ বান্ধব ও লাভজনক উপায়ে কিভাবে ছাগল পালন করা যায় তা প্রদর্শন হচ্ছে। ছাগলগুলো সারাদিন ছেড়ে রেখে রাতের বেলা ঘরে রেখে পালন করা হচ্ছে। দৈহিক চাহিদা মত দানাদার খাদ্য দুই বেলা প্রদান করা হয়। সেই সাথে পিপিআর ভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে।
বায়োগ্যাস প্ল্যান্টঃ খামারের গোবর বায়োগ্যাস প্ল্যান্টে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট হতে উৎপাদিত বায়োস্লারি হতে প্রাপ্ত জৈব সার ঘাসের প্লটে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়া, খামারের গোবর ও বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের উৎপাদিত জৈব সার বার্ডের ফুল ও সবজি বাগানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।